রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় র্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে রমনা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সাজ্জাদ হোসেন, কবির হোসেন, মো. শরিফ, মনির হোসেন ও হাবিবুর খন্দকার।
রমনা থানা সূত্রে জানা যায়, ডেমরার মাতুয়াইলের ট্রাসমি কোম্পানির ডিএমডি সাইফুল ইসলাম গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরের পর তাঁতিবাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ ২৬ লাখ ১২ হাজার টাকা স্কুল ব্যাগে নিয়ে বাড্ডায় যাওয়ার জন্য বংশাল চৌরাস্তা থেকে বাসে ওঠেন। বিকেল আনুমানিক ৪টা ২৫ মিনিটের দিকে বাসটি কাকরাইল মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে পড়লে হঠাৎ ১০/১২ জন লোক ওই বাসে উঠে নিজেদের র্যাব সদস্য বলে পরিচয় দেয়। তাদের মধ্যে একজন ‘র্যাব’ লেখা জ্যাকেট পরে ছিলেন এবং তার কাছে হাতকড়া ও ওয়্যারলেস সেট ছিল। তারা যাত্রীদের বলেন, এই গাড়িতে মামলার আসামি রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সাইফুল ইসলামকে দেখিয়ে দিলে অন্যরা তাকে টানাহেঁচড়া করে বাস থেকে নামিয়ে তাদের মাইক্রোবাসে ওঠায়। মাইক্রোবাসের মধ্যে তারা সাইফুল ইসলামের দুই হাত পিছনে নিয়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা ২৬ লাখ ১২ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন, মানিব্যাগসহ ১০ হাজার টাকা, হাতঘড়ি, প্যান্টের বেল্ট ছিনিয়ে নেয়। পরে দুই হাত ও চোখ বেঁধে তাকে ডেমরা এলাকার রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ১১ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, তদন্তাধীন এ মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার ইসিবি চত্বর এলাকা থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ এবং চালক কবির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে ওইদিন দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে বংশালের আল রাজ্জাক হোটেলের সামনে অভিযান চালিয়ে সাজ্জাদ, শরিফ, মনির ও হাবিবুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তাররা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাহিনীর সদস্যের মতো চেইন অব কমান্ড মেনে ডাকাতি করে। এক্ষেত্রে তারা নেতৃত্বস্থানীয় সদস্যদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করে এবং সে অনুযায়ী ডাকাতির পর ভাগের টাকা নির্ধারণ হয়। তাদের দলের সদস্য সংখ্যা ১০-১২ জন, যারা একেকটি ডাকাতির ঘটনায় বিভিন্ন ধাপে কাজ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৮:৫৬ ২৭ বার পঠিত