মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়ায় শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ইসরাইলের

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » সিরিয়ায় শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ইসরাইলের
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪



সিরিয়ায় শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ইসরাইলের

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কসহ সারা দেশে অন্তত শতাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ার পর্যবেক্ষক মানবাধিকার সংস্থা এসওএইচআর বলছে যে, সিরিয়ার শতাধিক স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে তেল আবিব। এতে রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত একটি গবেষণা কেন্দ্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরাইলের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল সামরিক স্থাপনা। ২৫০টির বেশি সামরিক স্থপনায় হামলার কথা জানিয়েছে কাতারভিত্তিক ওই গণমাধ্যম। বলা হয়েছে, ইসরাইলের বিমানবাহিনীর ইতিহাসে এটা সিরিয়ায় অন্যতম বড় হামলার ঘটনা। সিরিয়ায় ২৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন ও দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার পর এই হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরাইল বলছে, আসাদ সরকারের পতনের পর সেখানে ‘চরমপন্থীদের’ হাত থেকে অস্ত্র সরাতে এই হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ইরানের সহায়তায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন রাসায়নিক অস্ত্রাগার লক্ষ্যবস্তু করেছে তেল আবিব।
সোমবার, সিরিয়ার উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখান থেকে আগামী দিনে ঐক্যের ভিত্তিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। রাশিয়ার আহ্বানে জরুরি বৈঠকের আয়োজন করে নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, আমি মনে করি নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও ঐক্য রক্ষার প্রয়োজনে কমবেশি ঐক্যবদ্ধ ছিল। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং সেখানে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে নিরাপত্তা পরিষদ সবসময়ই ঐক্য বজায় রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

এসওএইচআর জানিয়েছে গত দুইদিনে সিরিয়াতে কয়েকশ লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এর মধ্যে ইরানি বিজ্ঞানীদের সহায়তায় গড়ে ওঠা অস্ত্রাগারগুলোকে বেশি লক্ষ্যবস্তু করেছে তেল আবিব। রাসায়নিক অস্ত্রের সন্দেহজনক মজুদ নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের রাসায়নিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করার সময় এই হামলা চালানো হয়েছে।

হামলার আগে অস্থায়ীভাবে গোলান মালভূমির বাফার জোন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ইসরাইল। ১৯৭৪ সালে সিরিয়ার সঙ্গে ইসরাইলের যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল, তাতে সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পতন হয়েছে বলে ঘোষণা দেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতা নিয়াহু। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে (আইডিএফ) গোলান মালভূমিতে নিজেদের অধিকৃত অংশ থেকে বাফার জোন এবং এর আশপাশের এলাকায় প্রবেশের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নেতানিয়াহু বলেছেন, শত্রু বাহিনীকে নিজেদের সীমান্তে প্রতিষ্ঠিত হতে দেবে না ইসরাইল।

এদিকে শনিবার যুক্তরাজ্য ভিত্তিক যুদ্ধ বিষয়ক একটি পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছে, কুনেইত্রা প্রদেশ থেকে সরে এসেছে সিরিয়ার সৈন্যরা। এই প্রদেশের একটি অংশ ওই বাফার জোনের অংশ। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত জোনের মধ্যে অবস্থিত পাঁচটি গ্রামের সিরীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে অবস্থান করার কথা জানিয়েছে আইডিএফ। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি পাথুরে মালভূমি গোলান।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৫:৪৪   ৪০ বার পঠিত