শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

ব্যবসার মূলধন জোগাড় করতে প্রবাসী চিকিৎসককে খুন: পুলিশ

প্রথম পাতা » অপরাধ » ব্যবসার মূলধন জোগাড় করতে প্রবাসী চিকিৎসককে খুন: পুলিশ
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪



ব্যবসার মূলধন জোগাড় করতে প্রবাসী চিকিৎসককে খুন: পুলিশ

রাজধানীর হাজারীবাগে নিজ বাসায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক চিকিৎসক এ কে এম আবদুর রশিদ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন ওই বাসার সাবেক ভাড়াটে। তারা রেস্তোরাঁ ব্যবসার ‘মূলধন জোগাড়ে’ এবং বাসা ভাড়া নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে চুরি করতে গিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

শুক্রবার ঢাকার মোহাম্মদপুর ও খুলনার ডুমুরিয়া এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন— নাইম খান (২২), জাহিদুর রহমান রিফাত (২০) ও আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওন (২২)।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ১৪ নভেম্বর রাতে হাজারীবাগে আবদুর রশিদের বাসায় অজ্ঞাতনামা কয়েক ব্যক্তি প্রবেশ করেন। এ সময় নামাজ আদায় করছিলেন তিনি। পরে তার সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের ‘ধস্তাধস্তি’ হয়। এসময় তার স্ত্রী সুফিয়া রশিদ পাশের কক্ষ থেকে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে আবদুর রশিদের বুকে একাধিক আঘাত করে দুষ্কৃতকারীরা। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। এ সময় তার স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসার আগেই পালিয়ে যান আসামিরা। পরে গুরুতর আহত চিকিৎসক রশিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান।

তিনি বলেন, আবদুর রশিদ ও সুফিয়া রশিদ পেশায় চিকিৎসক ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। তারা প্রতি সেপ্টেম্বরে দেশে এসে নিজেদের বাসায় কয়েক মাস থেকে চলে যেতেন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। তারা কখনও দেশে আসে না। এদিকে খুনের ওই ঘটনায় ১৫ নভেম্বর নিহতের চাচাতো ভাই রেজাউল করিম হাজারীবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ডিসি মাসুদ আলম বলেন, মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও ওই বাসায় মেস হিসেবে থাকা ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ করে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। পরে ঢাকা ও খুলনায় অভিযান চালিয়ে জড়িত সন্দেহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নাইমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, নাইম ও জাহিদুর ওই বাসার একটি ফ্ল্যাটে মেস করে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করতেন। এক মাস আগে বাসাটি ছাড়েন তারা। বকেয়া ভাড়া নিয়ে আবদুর রশিদের স্ত্রীর সঙ্গে তাদের মনোমালিন্যের জেরে ক্ষিপ্ত ছিলেন। এছাড়া নাইম ও জাহিদুর রেস্তোরাঁ ব্যবসার পরিকল্পনা করেন। তবে টাকা না থাকায় ওই বাসাকে টার্গেট করে টাকাপয়সা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন তারা। সে অনুযায়ী আসামিরা শাওনকে সঙ্গে নিয়ে সীমানাপ্রাচীর টপকে বাসায় প্রবেশ করেন।

মাসুদ আলম বলেন, আবদুর রশিদ তাহাজ্জদের নামাজ আদায় করতে ঘুম থেকে উঠেছিলেন। পরে ওই ব্যক্তিদের উপস্থিতি টের পান। পরে তিনি বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয় এবং একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৩:৪৪   ৫০ বার পঠিত