বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩

ভোলার দৌলতখানে অপ্রীতিকর অবস্থায় আলিম মাদ্রাসা থেকে ৬ ছেলে মেয়ে আটক।

প্রথম পাতা » শিরোনাম » ভোলার দৌলতখানে অপ্রীতিকর অবস্থায় আলিম মাদ্রাসা থেকে ৬ ছেলে মেয়ে আটক।
বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩



---


মোঃ লোকমান হোসেন

দৌলতখান,  (ভোলা) প্রতিনিধি,


ভোলার দৌলতখানের দক্ষিন জয়নগর আহাম্মদের হাট আলিম মাদ্রাসার প্রাঙ্গণের একটি নির্জন ঘর থেকে অপ্রীতিকর অবস্থায় ৬ জনকে আটক করেছে ঐ মাদ্রাসার শিক্ষকরা। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ধামাচাপা দিতে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও স্থানীয় লোকজন বসে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। সোমবার (৯ অক্টোবর) মাদ্রাসার পিছনের সবুজের ঘর থেকে তাদের আটক করা হয়। এনিয়ে মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক ও এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষিকা বলেন, আমি সোমবার (৯ অক্টোবর) বেলা ১:৩০ ঘটিকায় হেলাল স্যার, ও আব্দুর রহিম স্যারের নির্দেশে মাদ্রাসার পিছনে সবুজের ঘরে প্রবেশ করে মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর তিনজন ছাত্রী আখি, ফাহিমাকে ও তারেক, জিহাদের সাথে অপ্রিতিকর অবস্থায় দেখতে পাই। অমিকে দরজার পিছনে দেখতে পাই। সাকিলকে ঘরের বাহিরে পাহারা দিতে দেখতে পাই। বের হয়ে আসার সময় সাকিল আমাকে হুমকি দিয়ে বলে তোর হাত পাও ভেঙ গুরা করে দেব। যখন আমি বলি যে আমার শিক্ষকরা সাথে আছে। তখন শাকিব বলে তোর খবর আছে।


এবিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রিন্সিপাল ও সভাপতি বলেছে এবিষয় কাউকে না জানাতে। যদি জানাই তাহলে তার সমস্যা হবে। তবে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে। প্রশাসনের কেউ ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রশাসনের কেউ ছিলো না। তবে বাহিরের একজন লোকসহ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বিষয়টি মিমাংসা করেছে।


ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মনির সত্যতা নিশ্চিত করে ঐ শিক্ষিকার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, তাকে ছাড়পত্র দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হবে। সে এতো বড় সাহস কোথায় পেল! তিনি আরো বলেন, মাদ্রাসা একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এসব ছোটখাটো বিষয় আপনারা এড়িয়ে গেলে হয়। মিমাংসার বিষয় ফোনে জানতে চাইলে তিনি আগের কথা অস্বীকার করে জানান, ঐ ঘরে তারা জাম্বুরা না কি খেয়ে আনন্দ পূর্তি করছে। সেখান থেকে তাদের রাগ করে আনছি। তিন ছেলেকে দশ বেত্রাঘাত করে দেওয়া হয়েছে এবং মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।

 

মাদ্রাসার সভাপতি আলতাফ মাষ্টার কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমার মাদ্রাসার বিষয়টি আমরা মিমাংসা করবো। আপনারা প্রিন্সিপাল এর সাথে দেখা করুন।

 

অভিভাবকরা জানান, ছয় জন ছেলে-মেয়েকে একটা ঘর থেকে আটকের ঘটনা শুনেছি। এতো বড় অন্যায় করছে অথচ তিন ছেলেকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দিলো প্রিন্সিপাল। স্বজনপ্রীতির কারণে তাদের উপযুক্ত বিচার করা হয়নি। তাদের উপযুক্ত বিচারের আওতায় না আনলে আমাদের সন্তানরাও তাদের দেখা দেখি নষ্ট হয়ে যাবে। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে সন্তান কোথায় নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারবে। মাদ্রাসার কার্যক্রম নিয়ে এলাকাবাসীসহ তারা ক্ষিপ্ত।


দৌলতখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সত্যরঞ্জন খাসকেল জানান, এবিষয় কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাঠান মোঃ সাইদুজ্জামান জানান, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলাপ করে যদি অশোভনীয় কিছু হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ১২:০৯:৪৪   ১২৫ বার পঠিত