জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। সেখানে তাদের দেখতে যান মাসুদ বিন সাঈদী।
সোমবার সকালে তিনি আদালতে যান।
খেলাটা এখন হবে সংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে মাসুদ বিন সাঈদী বলেন, এ কথা বলেছি মূলত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে। কারণ আওয়ামী লীগ এ ট্রাইব্যুনাল দিয়ে বাংলাদেশকে বিভাজন করেছে। এ ট্রাইব্যুনালকে ব্যবহার করে দেশের বীর রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করেছে। সে ট্রাইব্যুনাল আবার প্রস্তুত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এ ট্রাইব্যুনালে এখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি বিশ্বাস করি না । আমরা ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করি। তারা জুলুম করেছে, জুলুমের বিচার হচ্ছে; এটাই দেখতে এসছি।
এদিকে গত ১৫ অক্টোবর মাসুদ বিন সাঈদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘ট্রাইব্যুনাল ইজ রেডি। এবার আসো খেলা হবে! খুনি হাসিনার বানানো আইনে এবং তারই বানানো ট্রাইব্যুনালে হাসিনা আর তার দোসরদের বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।’
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ঢাকায় তার শহীদবাগের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় ২০১০ সালের ২৯ জুন। তখন থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন। তাকে গ্রেফতারের পর একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা হয়।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতনের অভিযোগ এনে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। সেই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দেশজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার আপিলের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেন ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। সেই রায়ে সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আপিল বিভাগের রায়ও পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। কিন্তু সেই আবেদনে আপিল বিভাগের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ে কোনো পরিবর্তন হয়নি। সেই থেকে তাঁকে গাজীপুরে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান।
আজকে যাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী, শাজাহান খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম। অন্য একটি মামলায় রিমান্ডে থাকায় আব্দুর রাজ্জাককে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি।
এর আগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাদের ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো। কড়া নিরাপত্তায় সকাল ১০টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৬:২২ ৬২ বার পঠিত