বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডার ফারুকের মৃত্যু বংশাল থানার সাবেক ওসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্তের নির্দেশ

প্রথম পাতা » জেলা জজ কোর্ট » পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডার ফারুকের মৃত্যু বংশাল থানার সাবেক ওসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্তের নির্দেশ
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪



বংশাল থানার সাবেক ওসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্তের নির্দেশ

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বডি বিল্ডার ফারুক হোসেনের মৃত্যুর অভিযোগে বংশাল থানার সাবেক ওসি মো. মাঈনুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহ আলম মিছিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নিচে নন এমন একজন কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে মালাটি পুনঃতদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত ১৪ আগস্ট গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. ফজলুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর বিরুদ্ধে বাদী নারাজি দরখাস্ত দাখিল করেছেন।

এরও আগে গত ৩১ জানুয়ারি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে নিহত মো. ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। শুনানি শেষে বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ২৮ মার্চের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন- বংশাল থানার কায়েতটুলি পুলিশ ফাড়ির এসআই মো. ইমদাদুল হক, বংশাল থানার এসআই আবু সালেহ, মাসুদ রান, বুলবুল আহম্মেদ ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি রাতে সন্দেহভাজন হিসেবে রাস্তা থেকে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায় কায়েতটুলী ফাঁড়ির পুলিশ। স্বামীকে ছাড়াতে সেই রাতে ২ বছরের ছেলে ফারদিনকে নিয়ে ফাঁড়িতে যান তিনি। শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে পুলিশের পা ধরে আকুতি জানালেও মন গলেনি পুলিশের। ফারুককে ছাড়াতে ইমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন পুলিশের কয়েকজন। ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ফাঁড়িতেই বর্বর নির্যাতন চালানো হয় ফারুকের ওপর। এরপর গাঁজা উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে মিথ্যা সাক্ষীদের দিয়ে ফারুককে মাদকের মামলায় জড়িয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পুলিশি নির্যাতনের ফলে অসুস্থ হয়ে কারাগারেই মৃত্যু হয় ফারুকের।

তবে নিহতের স্ত্রীর এ অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে দাবি করছেন কায়েতটুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. ইমদাদুল হক। ফারুকের বিরুদ্ধে করা মাদক মামলার বাদী এই পুলিশ কর্মকর্তা। ফারুকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে এসআই ইমদাদুল হক উল্লেখ করেন, এক মাদক ব্যবসায়ী নেশাজাতীয় মাদকদ্রব্য বিক্রি করছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১২ জানুয়ারি রাত ১১টা ২০ মিনিটে বংশাল থানাধীন নাজিমউদ্দিন রোডস্থ হাসিনা মঞ্জিলের সামনে অভিযান চালায় কায়েতটুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ইমদাদুল হক, এএসআই মাসুদ রানা ও এএসআই বুলবুল আহমেদ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ওই মাদক ব্যবসায়ী (ফারুক)। এক পর্যায়ে সঙ্গীয় অফিসারদের সহায়তায় ওই আসামিকে আটক করেন ইমদাদুল হক। পরবর্তীতে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর ১৫ জানুয়ারি বাদীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে কেউ একজন জানায়, ‘ফারুক আপনার কি হয়। সে গতরাতে মারা গেছে।’ বাদী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখেন ফারুকের গলায়, বুকে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন।

বাংলাদেশ সময়: ২২:০০:০০   ৬ বার পঠিত