রাখঢাক না রেখে সোজাসাপ্টাভাবে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান জানিয়ে দিলেন গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। গাজায় ইসরাইলের নৃশংসতা, পাশবিকতা শুরুর পর থেকে এটাই সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সবচেয়ে কড়া সমালোচনা। এই গণহত্যার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। মুসলিম এবং আরব নেতাদের এক সামিটে বক্তব্যকালে ক্রাউন প্রিন্স লেবানন ও ইরানে চালানো ইসরাইলের হামলারও কড়া নিন্দা জানিয়েছেন। রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হওয়ার এটা এক চমৎকার বহিঃপ্রকাশ। ইরানের তেল স্থাপনার বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলার বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি। সম্মেলনে যোগ দেয়া অন্য নেতাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এই নেতা ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর ও গাজা থেকে ইসরাইলের সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার দাবি করেন।
ওদিকে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সাউদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার কারণে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। গাজার মানুষকে অনাহারে রাখার জন্য তিনি ইসরাইলকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুরুতেই অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে। ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ইসরাইলের রকেট হামলা করে হামাস। তাতে ইসরাইলে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়। এরপর থেকে গাজা, পশ্চিমতীরে নির্মমভাবে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তারা হামাসকে ধ্বংসের নামে পুরো একটি জনপদ, একটি জনগোষ্ঠীকে নির্মূলে নেমেছে। তাতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৩,৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তার বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অফিসের হিসাবে গত ৬ মাসে গাজায় যেসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগই নারী ও শিশু। এমন প্রেক্ষাপটে গাজায় জাতিসংঘের স্টাফ এবং স্থাপনায় অব্যাহতভাবে ইসরাইলের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ওই সামিটে অংশ নেয়া নেতারা। গত মাসে ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেট একটি বিল পাস করে। তাতে ফিলিস্তিন বিষয়ক জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে ইসরাইল ও দখলিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে তাদের কর্মকাণ্ড চালানো থেকে নিষিদ্ধ করে। তাদের অভিযোগ এই সংস্থা হামাসকে সহযোগিতা করছে। ওদিকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করার জন্য এই সংস্থার সক্ষমতা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন সহ কিছু দেশ। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় ফিরছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ইসরাইলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর নেতারা ভালোভাবেই জানেন। ট্রাম্পের সঙ্গে তাদেরও ভাল সম্পর্ক আছে। তারা চান ট্রাম্প যেন তার প্রভাব ব্যবহার করেন এবং এই যুদ্ধ বন্ধে ব্যবস্থা নেন। জো বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্পকে বেশি পছন্দ বলে মনে করে সৌদি আরব। তবে মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের রেকর্ড মিশ্র ধরনের। প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করে তিনি ইসরাইলকে খুশি করেছেন। জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মুসলিম বিশ্ব।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩১:৩৪ ২০ বার পঠিত