ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়নে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ভোলায় সরকারি সফরকালে শুক্রবার (১ই নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভোলা সার্কিট হাউজে ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম ওবায়দুর রহমান বিন মোস্তফা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন অমির স্বাক্ষরিত এ স্মারকলিপি স্বহস্তে প্রদান করা হয়।
এসময় উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন,ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব মাওলানা ওবায়েদ বিন মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোশারফ অমি, শিক্ষক নাজিমউদ্দীন চৌধুরী, রাজীব হায়দার প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ্য করা হয়, দ্বীপজেলা হিসেবে ভোলার অবকাঠামোগত বিশেষত্ব রয়েছে। বিশেষত্ব থাকার পরও ভোলা উন্নয়নের দিক হতে পিছিয়ে রয়েছে। একটিমাত্র সেতু প্রস্তাবিত ভোলা-বরিশাল সেতুর অভাবে সমগ্র দেশ সড়ক যোগাযোগের অধীন হলেও ভোলা ঐ নেটওয়ার্কের বাহিরে। দেশের প্রায় ৩৫% ইলিশ সহ প্রায় ৫০% মৎস্য আহরন হয় এই জেলায়। বৈরি আবহাওয়ায় নৌপথ বন্ধ হলে সেতুর অভাবে কোটি-কোটি টাকার মৎস্য নষ্ট হয়ে যায়। ভোলার প্রায় ২০ লক্ষ জনগন সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারনে অত্র অঞ্চল জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখলেও ভোলাবাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে অবহেলিত রয়েছে। একটি সেতুর অভাবে মুমূর্ষ রোগী বিনা চিকিৎসায় পথিমধ্যে ইন্তেকাল করেন। ভোলা উপকূলীয় জেলা হওয়ার কারনে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আমাদের প্রিয় জন্মস্থান ভোলার উপরিউক্ত বঞ্চনার কথা বিবেচনা করে হাজারো শহীদের রক্তে অর্জিত অন্তবর্তী সরকারের মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে আপনার নিকট আমাদের দাবীগুলো পেশ করছি। ২০১১ সালে ভোলা বরিশাল সেতুর ঘোষনা হয়েছিলো। এই সেতুর একাধিক বার ফিজিবিলিটি হলেও অজ্ঞাত কারনে শুরু হয়নি। ২০১৭ সালে কাজ শুরু হয়ে ২০২৫ সালে কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিলো। অথচ অদ্যবদি কাজ শুরু হয়নি।
একটি জাপানী অর্থ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান “মিয়াগাওয়া কেনসেটকু” ১৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ নিয়ে ২ বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে কাজ শুরু না হওয়ার কারনে প্রতিষ্ঠানটি ফেরত গিয়েছে। অথচ এই সেতু বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ন মেগা প্রজেক্টের মধ্যে ৪ নম্বর অবস্থানে ছিলো। এই সেতু হলে ঢাকা সহ দেশের ২২ জেলার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ হবে। ভোলায় রয়েছে প্রচুর গ্যাস স¤পদ। ভোলা থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আনতে এই সেতু ব্যবহার হবে। সেতুটি বাস্তবায়ন হলে ভোলা হবে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। একই সাথে ভোলা ও বরিশাল হবে গ্যাস ভিত্তিক শিল্পাঞ্চল; যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে। ভোলা বাসি দেশের অর্থনীতিতে ৫-৬ লক্ষ কোটি টাকার গ্যাস দিচ্ছে। তাই এই গ্যাস স¤পদে ভোলাবাসীর হজ্ব ও অগ্রাধিকার রয়েছে। আমরা ভোলাবাসী প্রয়োজনে জিওবি ফান্ড থেকেই মাত্র ১৭ হাজার কোটি টাকা অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন চাই।
এছাড়াও চীন, দক্ষিন কোরিয়া, জাপান ও এডিপি ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মান কাজের অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিশ লক্ষ ভোলা বাসীর পক্ষে আমাদের উত্থাপিত দাবীগুলো গত ৫ আগস্ট মহান বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত অর্ধবর্তি সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদে উঠিয়ে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নে উদ্যেগী হয়ে ভোলাবাসীর বঞ্চনা দূর করবেন বলে আমরা একান্তভাবে আশাবাদী।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৭:১৩ ৭৬ বার পঠিত