আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দুটি অপরাধী চক্রের সংঘর্ষে প্রাণ হারান নাসির বিশ্বাস ও মুন্না হাওলাদার। গত শুক্রবারের এ ঘটনায় আরও দু’জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আশিক নামে একজনের অবস্থা শঙ্কটাপন্ন।
পুলিশ বলছে, সংঘর্ষে জড়ানো অ্যালেক্স ইমন ও আরমানের অনুসারীরা চুরি-ছিনতাই, মাদক কারবারসহ নানা অপরাধে জড়িত। সম্প্রতি তারা জামিনে বেরিয়ে নিজেদের সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারে নেমে সংঘাতে জড়াচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহত দু’জনই আরমান গ্রুপের সদস্য। তাদের মধ্যে মুন্নার বিরুদ্ধে হত্যা, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত পাঁচটি মামলা রয়েছে। আর নাসিরের বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি মাদক মামলা। আহত আশিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোমায় আছেন। তিনি ইমন গ্রুপের সদস্য। এ ছাড়া শাওন নামে আরেকজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। তখন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অন্তত চারজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মোহাম্মদপুর এলাকার মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের অনেকেই কারাগারে ছিল। গত কয়েক সপ্তাহে তারা জামিনে মুক্ত হয়। এলাকায় ফিরে তারা আবারও নিজেদের অপরাধ জগতে সক্রিয় হয়েছে। কে কোন এলাকার অপরাধ তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করবে, তা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে নিহত দু’জনকে পুলিশ অপরাধীর তালিকাভুক্ত করলেও স্বজনরা তা মানতে নারাজ। নিহত নাসিরের ভাই ইসলাম বিশ্বাস জানান, তাঁর ভাই পেশায় রাজমিস্ত্রি। রায়েরবাজার এলাকায় ভাড়া বাড়ৈখালীর ১২ নম্বর সড়কের বাসায় থাকতেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দু’পক্ষের মারামারির মধ্যে পড়েন। দুর্বৃত্তরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
অন্যদিকে, মুন্না রায়েরবাজারের পাবনা হাউস গলিতে থাকতেন। তিনিও সাধারণ শ্রমজীবী বলে দাবি স্বজনের। ঘটনাস্থলে দুর্বৃত্তের হামলায় আহত হলে তাঁকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৫:২২ ১২০ বার পঠিত