খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর তৎকালীন প্রধান কর্নেল (অব.) মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে তুলে নিয়ে গুম করার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ছয় বছর আগে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার বাসা থেকে তাকে গুম করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী নিজেই মামলাটি করেন। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন বাদীর অভিযোগ এজাহার আকারে রেকর্ড করার জন্য নিউমার্কেট থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদীন, র্যাবের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ডিবির সাবেক উপকমিশনার (ডিসি) মো. আবদুল বাতেন, মো. মোখলেসুর রহমান, ডিবির সাবেক এডিসি গোলাম মোস্তফা রাসেল, গোলাম সাকলাইন, ডিবির সাবেক এসি মাহমুদ নাসের জনি, ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আবু আজিফ ও সিরাজুল ইসলাম খান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৯ সালে দিকে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনী কর্মকর্তা হিসেবে মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিবাদ করেছিলেন। পরে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে তার ওপর চাপ তৈরি করেন মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদীন। এরপর তিনি অবসরে যান। ২০১৬ সালে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার জিয়ার প্রধান নিরাপত্তা রক্ষাকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। এ খবর জানতে পেরে প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা তারেক আহমেদ সিদ্দিক ও মো. সাইফুল আবেদীন তাকে খালেদা জিয়ার প্রধান নিরাপত্তা রক্ষাকারী কর্মকর্তার পদ থেকে সরে যেতে চাপ দেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একটি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হয়। এরপর ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে তাকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নিয়ে গুম করা হয়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এ ঘটনার পর তার স্ত্রী নিউমার্কেট থানায় মামলা করতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি। পরে খালেদা জিয়ার প্রধান নিরাপত্তা রক্ষাকারী কর্মকর্তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী। এছাড়া গুমের বিষয়ে কোনো প্রতিকার নেবেন না বলে ঘোষণা দিতে বাধ্য করা হয়। গুম হওয়ার দুদিন পর তাকে শাহবাগ থানার আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এরপর ২৫ দিন তিনি কারাভোগ করেন। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ৪:০১:১৮ ৬১ বার পঠিত