বাংলাদেশ বেতারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, নিজস্ব শিল্পী এবং কলাকুশলীদের চাকরিতে পদোন্নতি বঞ্চনাসহ নানা বৈষম্য নিরসনের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেতার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ বেতারের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) মুহাম্মদ শরীফুল কাদের এই দাবিগুলো তুলে ধরেন।
এসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘একই পদে ২০ বছর, পদোন্নতি চাই, দিতে হবে; পদোন্নতিতে অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা মানি না, মানবো না; বৈষম্যমূলক নিয়োগবিধি মানি না, মানবো না; সচিবালয়ের ন্যায় পদ পদবী ও পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে; বাংলাদেশ একটা পরিবার, সবার সমান অধিকার; ব্লক পদে পদোন্নতি ব্যবস্থা করতে হবে’ সহ আরও নানা প্লেকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
বেতারের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে— বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চনার অবসান করা, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিসহ উপসচিব পদে ন্যায্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, একীভূত বিসিএস (তথ্য) ক্যাডার বাস্তবায়ন করা, বাংলাদেশ বেতার হতে নিজস্ব মহাপরিচালক নিয়োগ করা, নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি বাতিলপূর্বক পুনঃসংশোধন করা ও বাংলাদেশ বেতারের নিজস্ব শিল্পীদের পদ স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ।
মুহাম্মদ শরীফুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ বেতারের ৯ম, ১৩ তম এবং ১৫তম বিসিএস কর্মকর্তারা এখনও ৪র্থ গ্রেডে আছেন। এছাড়া ২৪তম থেকে ২৭তম বিসিএস এর কর্মকর্তারা ৬ষ্ঠ গ্রেডে রয়েছেন যাদের অধিকাংশ ১৪ বছরের অধিক এবং ২৮তম থেকে ৩৫তম বিসিএস-এর নবম গ্রেডের অধিকাংশ কর্মকর্তা প্রায় ৮ থেকে ১৪ বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত রয়েছেন।
তিনি বলেন, বিসিএস তথ্য ক্যাডারের চারটি ভাগ রয়েছে। উপসচিব পদে আবেদন প্রেরণের ক্ষেত্রে এ চারটি ভাগের মধ্যে একটি ভাগ গণযোগাযোগ/পিআইডি থেকে ১৩৬টি ভিত্তি পদের বিপরীতে প্রতি বছর ১০টি আবেদন গ্রহণ করা হয় অথচ নিদারুণ বৈষম্যের নজির স্থাপন করে বাংলাদেশ বেতারের বিসিএস তথ্য ক্যাডারের ৩টি অংশ থেকে ৩২৩টি ভিত্তি পদের বিপরীতে অযৌক্তিকভাবে মাত্র ১০টি আবেদন গ্রহণ করা হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্র মেরামতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য জাতীয় গণমাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশ বেতারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিদ্যমান বাস্তবতায় বাংলাদেশ বেতারের চলমান বৈষম্য নিরসন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করা হলে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনর মূল যে লক্ষ্য তা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের ন্যায্য দাবিসমূহ শিগগিরই পূরণ করবে বলে মানববন্ধনে উপস্থিত সবাই আশা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১:৩৬:২৬ ৬৮ বার পঠিত