শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রথম পাতা » জাতীয় » কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে
শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪



আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

জনগণের নিরাপত্তা, চলাফেরার নিরাপত্তা, কাজ করার পরিবেশ রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। এগুলি যদি হুমকিতে পড়ে তবে সরকারকে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বিবিসি বাংলায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রী কোটা বিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের আদেশপ্রাপ্তির পরে তারা যখন অনুধাবন করেছে আদালতের আদেশটা কী, তখন তারা বুঝতে পেরেছে এই আন্দোলন স্তিমিত হয়ে আসছে। ২০১৮ সালে কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সকল কোটা তুলে দেয়া হলো। এরপর এটির একটি পরিপত্র জারি করা হল। বিষয়টি হাইকোর্ট ডিভিশনে রিটের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। এখানে আজকে বা সেদিন যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিলেন তারা তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য কোন পক্ষও হন নাই কোন প্রচেষ্টাও দেখা যায় নাই। আদালতের সম্মুখে যেটা ছিল সেটা আইনবিরোধী বলে ঘোষণা দিয়ে একটা রায় দিয়েছে। সরকার কিন্তু আবার আপিল বিভাগে একটা আপিলও দায়ের করেছে। সেখানেও কিন্তু যারা আন্দোলনকারী তারা পক্ষভুক্ত হন নাই।

তাদের বক্তব্য আদালতের সামনে হওয়া উচিত রাস্তায় নয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, রাস্তায় চেচিয়ে আদালতের রায় পরিবর্তন করা যায় না। আদালতে গিয়ে যৌক্তিক তর্ক বিতর্ক করতে হবে, তখন আদালত ব্যবস্থা করবে। তারা আদালতে গেছেন আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। আদালত তাদের প্রাথমিক বক্তব্য বিবেচনায় নিয়েছে, তাদের পক্ষভুক্ত করেছে। অন্ততপক্ষে তারা সাময়িক প্রতিকার পেয়েছে। আদালত এটাও বলেছে যখন পূর্ণাঙ্গ শুনানি হবে, তাদের বক্তব্যও শোনা হবে।

আনিসুল হক বলেন, স্বাভাবিকভাবে সুপ্রিম কোর্ট বিচলিত কারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছে। আদালত তিনটি নির্দেশনা দিয়েছে। সকল প্রতিবাদকারীকে কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদেরকে স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে নিজ নিজ কাজে অর্থাৎ পড়াশুনায় মনোনিবেশ করতে বলা হল, দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর মহোদয় ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবেন মর্মে এই আদালত আশা করে এবং প্রতিবাদকারী ছাত্র ছাত্রীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে অত্র আদালতে বক্তব্য তুলে ধরতে পারবেন।

তিনি বলেন, আদালত মূল দরখাস্তটি নিষ্পত্তিকালে তাদের বক্তব্য বিবেচনায় নেবে। এই তারিখ হচ্ছে আগামী ৭ই আগস্ট। সেখানে তারাও বক্তব্য দেবেন। আদালত যেহেতু বলেছে তারা সকল পক্ষের বক্তব্য শুনে একটা যৌক্তিক রায় দেবেন আমাদের উচিত সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করা। কিন্তু এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে কোটা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের, নারীদের, অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য। এটা যে ডিসক্রিমিনেশন না এটা যে একটা স্পেশাল জিনিস এটার কিন্তু প্রতিচ্ছবি সংবিধানে আছে। সংবিধান কিন্তু সেটা রক্ষা করেছে। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযোদ্ধা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই চারটা বাংলাদেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশ ও এই চারটা জিনিসকে কিন্তু বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। অবশ্যই সকলের জন্য সম-অধিকার থাকবে কিন্তু আমাদের যেখানে শ্রদ্ধার জায়গা সেখানে শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। আদালত স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছে সকলের বক্তব্যই বিবেচনায় আনা হবে। রাস্তায় মানুষকে কষ্ট না দিয়ে যেটা উচিত আদালতে বক্তব্য দেয়া।

এক প্রশ্নের জবাবে পূর্বের আন্দোলনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, পূর্বের আন্দোলনে সম্পূর্ণ কোটা বাতিল যদি না চেয়ে থাকে তারাতো বলে নাই সম্পূর্ণ বাতিল না করে সংস্কার করেন। যখন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা আদালতে গেলেন তখনওতো তারা আদালতে বলতে পারতেন। আমরা সম্পূর্ণ কোটা বাতিল চাই নাই, আমরা সংস্কার চেয়েছি। এই সংস্কারের জন্য সেখানে যেতে চাই তারাতো ওখানে গেলই না। আমরা কি বুঝব, বাতিল করেছে সেটাই তারা চাচ্ছে।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তারা বক্তব্য যেন আদালতে এসে দেয়। আন্দোলন রাস্তায় না করে পড়াশুনায় ফিরে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:২২:৪৯   ৯৩ বার পঠিত