সাবেক সংসদ সদস্য ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত সামসুদ্দোহা খান মজলিশের স্ত্রী সেলিনা খান মজলিশ মেহের হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই বলছে, বড় মেয়ে শামীমা তাহের পপির পরকীয়া সম্পর্কের কথা জেনে যান মা সেলিমা খান মজলিস। এ কারণে পরকীয়া প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে মাকে হত্যা করেন পপি। পরে এ হত্যাকাণ্ডকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রচার করে ঘটনা ধামাচাপা চেষ্টা করেন বড় মেয়ে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
এ হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন—মূল হত্যাকারী সাবেক এমপির বাসার বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি সুবল কুমার রায় (৫০), এমপিকন্যা শামীমা খান মজলিস ওরফে (পপি) এবং আরতি সরকার (৬০)।
জানা যায়, ১৩ বছর আগে সাভারে নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হন সেলিমা খান মজলিস। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান। সেই সময়ের চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।
ঘটনার এতদিন পরে পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে লোমহর্ষক এ হত্যা মামলার রহস্য। পিবিআই বলছে, বড় মেয়ে শামীমা তাহের পপির পরকীয়া প্রেমের বলি হন সেলিনা খান মজলিস। মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় প্রেমিক বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি সুবল কুমার রায়কে সঙ্গে নিয়ে মাকে হত্যা করেন পপি।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, সেলিমা খান মজলিসের বড় মেয়ে পপি তার স্বামীকে নিয়ে নিচতলায় বসবাস করতেন। সেখানে সুবল নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ২০০১ সালে আসামি সুবল কুমার রায় এবং শামীমা খান পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এই বিষয়টি ২০০৫ সালে জানাজানি হলে সুবলকে মারধর করা হয়। তাকে এই বাসায় আসতে নিষেধ করা হয়। ২০০৮ সালে সুবল কুমার রায় বিয়ে করেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি আবার বাসায় যাতায়াত শুরু করেন। এই যাতায়াত দেখে ফেলায় সুবল ও শামিমা তাহের পপি মিলে সেলিমা খানকে হত্যার উদ্দেশে হামলা করেন।
হত্যার দিনের ঘটনা
হত্যাকাণ্ডের দিন ফজরের নামাজের সময় সেলিমা খান মজলিশ ছাঁদে উঠেছিলেন এবং সেখান থেকে দেখতে পান সুবল তার বাড়ির দিকে আসছেন। এরপর তিনি এটা দেখে চিৎকার করতে করতে নিচে নামছিলেন। তখন সুবল এবং পপি মায়ের চিৎকার থামাতে উপরে যান। এসময় পপি মাকে জাপটে ধরেন এবং পাশে থাকা একটি চাকু দিয়ে গলায় তিনটি পোচ দেন। এরপর যখন পপি দেখতে পান যে তা মা মারা যাননি, তখন সুবল সুইচ বোর্ড ভেঙে দুইটি তার বের করে ভুক্তভোগীর মাথায় শক দেন মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ০:২১:২১ ৫৮ বার পঠিত #পরকীয়া #শামীমা তাহের পপি #সামসুদ্দোহা খান মজলিশ #সেলিনা খান মজলিশ মেহের