চাকরি দেওয়ার নামে লিবিয়ায় নেওয়ার পর আটকে রেখে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন– বাদশা মিয়া ও তার সহযোগী আরজু বেগম। বুধবার কক্সবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তারের কথা জানায় সিআইডি।
শুক্রবার সিআইডি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মানবপাচারকারী চক্রটি উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায়। পরে লিবিয়ায় অবস্থানরত আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের তত্ত্বাবধানে তাদের আটকে রাখা হয়। তারা মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে অন্য একটি চক্রের কাছে আটকদের হস্তান্তর করে। এ চক্রটি ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখাত। সেইসঙ্গে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ চাইতো। মুক্তিপণ পেলে ভুক্তভোগীদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠিয়ে দিত। এভাবে অনেকে সাগরে মারা গেছেন। কিছু লোক উদ্ধার হয়েছে এবং অল্পসংখ্যক ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছেন।
সিআইডি জানায়, মাগুরা সদর থানার একটি মামলা সূত্রে জানা যায়, নাছির হোসেন গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর তার চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়ায় যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলস মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করেন। চার মাস আগে তাকে লিবিয়ার একটি স্থানে আটকে রাখে মানব পাচারকারীরা। মুক্তিপণ হিসেবে তার পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়।
তদন্তে দেখা যায়, বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ব্যাংকে একটি চলতি হিসাব খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। ওই হিসাবে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা এবং ১০ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৫ টাকা তোলা হয়। পরে বাদশাকে কক্সবাজারের পেকুয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার প্রতিবেশী চাচাতো বোন আরজুর স্বামী লিবিয়ায় মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত। সহযোগী হিসেবে আরজুকেও গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুজনই আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।