মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন তিজো, বান্দরবান প্রতিনিধি:
বান্দরবানের আলোচিত সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রোয়াংছড়ির বম সম্প্রদায়ের মানুষ ও এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় রোয়াংছড়ি সদরে এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়। ।
সকাল নয়টায় কেএনএফের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এই সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রোয়াংছড়ির বম সম্প্রদায়ের মানুষ ও এলাকার বাসিন্দারা।
সমাবেশে বলেন, কেএনএফের ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করার আহবান জানান সর্বস্তরের জনসাধারণ।
রোয়াংছড়ি বাজার এলাকায় সকাল আটটা থেকে লোকজন জড়ো হতে থাকেন। বিশেষ করে বম জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষকে বেশি দেখা গেছে। সেখানে তাঁরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেনেট বম। আরও বক্তব্য দেন পাইক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান (মৌজাপ্রধান) বৈইথান বম, খ্রিষ্টান পাদরি পারখুপ বম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নেইটন বুইতিং বম।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নেইটন বুইতিং বম কেএনএফকে একটি অবৈধ সশস্ত্র সংগঠন উল্লেখ করে বলেন, সারা দেশে শান্তিপূর্ণ ও সম্প্রীতির জেলা হিসেবে পরিচিত বান্দরবান এখন আতঙ্কের নাম হয়েছে। একমাত্র কেএনএফের হত্যা, অপহরণ, ব্যাংক ও অস্ত্র লুটের কারণে এটি হয়েছে। তাদের অপকর্মের কারণে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় শত শত পরিবার, বিশেষ করে বম জনগোষ্ঠীর মানুষ খেয়ে না খেয়ে জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি কেএনএফকে সন্ত্রাসী তৎপরতা পরিহার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লুট করা ১৪টি অস্ত্র ফিরিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান। অন্যথায় তাদের প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেন।
লিখিত বক্তব্যে কেএনএফের প্রতি তিনটি বার্তা দেওয়া হয়। সেগুলো হলো ব্যাংক ডাকাতির সময় পুলিশ ও আনসার বাহিনীর লুট করা ১৪টি অস্ত্র ও গুলি ফিরিয়ে দেওয়া, অবৈধ সশস্ত্র কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা।
আলোচিত সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে শান্তি আলোচনা চলাকালে গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, পুলিশ-আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র, ৪১৫টি গুলি লুটের ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী কেএনএফ সদস্যদের গ্রেপ্তার, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযানে এ পর্যন্ত কয়েকজন কেএনএফ সদস্য নিহত হয়েছেন। ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯২ জনকে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৪:৫৫ ১৪৩ বার পঠিত