কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের চংশোলাকিয়া গ্রামের পঁচুশাহ মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে মোয়াজ্জিনও আহত হন। এ ঘটনায় এলাকাবাসী অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
আহত ইমাম হলেন রবিউল ইসলাম (৩৫)। তিনি করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুরের বাসিন্দা। তিনি আড়াই বছর ধরে পঁচুশাহ মসজিদে ইমামতি করে আসছেন। অপরদিকে আহত মোয়াজ্জিন আরমান মিয়া (২৫) চংশোলাকিয়া এলাকার দস্তর আলীর ছেলে।
অভিযুক্তরা হলেন মহিনন্দ ইউনিয়নের চংশোলাকিয়া গ্রামের নুরুল আমিন (৪৫) ও একই এলাকার রমজান মিয়া (২৫)।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবুল কালাম ও মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অভিযুক্ত নুরুল আমিনের কোনো ইমামকে পছন্দ হয় না। এখন পর্যন্ত মসজিদে যে কয়জন ইমাম নিয়োগ হয়েছেন প্রত্যেকের সময় বিভিন্ন অভিযোগ করেন। বর্তমানে নিয়োগপ্রাপ্ত ইমামের বিরুদ্ধেও তার দীর্ঘদিনের বিভিন্ন অভিযোগ। এ কারণে মসজিদের কমিটির লোকজনও নুরুল আমিনের প্রতি অসন্তুষ্ট।
সকালে অভিযুক্ত নুরুল আমিন ও রমজান মিয়া রবিউল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করেন। দীর্ঘসময় তাদের আলোচনা হয়। পরে রবিউল ইসলাম বের হলে মসজিদের সামনে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ইমাম-মোয়াজ্জিনকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মসজিদের অপর ইমাম মাজহারুল হক বলেন, ‘গত আড়াই বছর ধরে আহত রবিউল ইসলাম পঁচুশাহ মসজিদের ইমাম হিসেবে কর্মরত আছেন। শুরু থেকেই ইমামের প্রতি বিভিন্ন অভিযোগ নুরুল আমিন ও রমজান আলীর। সেই ক্ষোভ থেকে সকালে মসজিদের সামনে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ইমাম রবিউল ইসলামকে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন। এ সময় মোয়াজ্জিন ইমামকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা দুজনকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।’
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. রহমতুল্লাহ বলেন, ‘অভিযুক্ত নুরুল আমিন ঢাকায় থাকেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসেন। গত দুই দিন আগে ইমাম রবিউল ইসলামকে মসজিদ থেকে চলে যেতে বলেন নুরুল আমিন। চলে না গেলে আগের ইমামদের মতো অপমান-অপদস্ত করে বিদায় করা হবে বলে ইমামকে জানিয়ে দেন। এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটিকে ইমাম বিষয়টি জানালে বসে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। এরই মধ্যে আজ সোমবার হামলা করা হলো।’
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় এলাকাবাসী দুজনকে আটক করে পুলিশের খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৮:০২ ১০৫ বার পঠিত