রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪

রাজবাড়ীতে নগ্নভিডিও, ভূয়া কাবিননামা, তৈরি করে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিতো এ চক্র

প্রথম পাতা » শিরোনাম » রাজবাড়ীতে নগ্নভিডিও, ভূয়া কাবিননামা, তৈরি করে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিতো এ চক্র
রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪



 

---

স্বপন বিশ্বাস, রাজবাড়ীঃ

রাজবাড়ীতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, সুন্দরী নারী, এ্যাডভোকেট, সাজানো বোন জামাই ও কাজি মিলে পর্নোগ্রাফি ও ভূয়া কাবিননামা, তৈরি করে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিতো এ চক্র । জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি’র অভিযানে এ ব্লাকমেইল চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।



গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাজবাড়ী শহরের বিনোদপর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. মাসুদুর রহমান (৪৫), সদর উপজেলার বাগমারা গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে মোছা. রিমা খাতুন (২৬), ভবানীপুর গ্রামের মৃত বানু মোল্লার ছেলে মো. ফজলুল হক (৫৩), লক্ষীনারায়নপুর গ্রামের মৃত ক্বারী আনোয়ার উল্লাহর ছেলে মো. এমদাদ হোসেন (৫৯) ও কালুখালী উপজেলার মদাপুর গ্রামের আবুল সরদারের ছেলে জামাল সরদার (৫২)।



শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান খান এ তথ্য জানান।


ঘটনার বিবরনে জানাযায়,


 আসামী রিমা খাতুন ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশ আর্মিতে চাকুরীরত সংবাদদাতা শাহজাহান খান এর ছেলে মাহফুজকে ভালবাসার ফাঁদে ফেলে কথা বলার জন্য আসামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মাসুদুর রহমানের বাসায় গোপন অভিসারে ডেকে নিয়ে আসামী মাসুদুর রহমান তাহার সহযোগী সাজানো বোন জামাই জামাল সর্দার।


এরপর এ্যাডভোকেট ফজলুল হক এর সহায়তায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামী রিমা খাতুন এবং মাহফুজ কে উলঙ্গ করে মোবাইলে ভিডিও ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে মাহফুজের নিকট থেকে তাৎক্ষনিক হাতিয়ে নেয় দশ হাজার টাকা, এবং জোরপূর্বক তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় প্রেমের জালে পড়া সৈনিক মাহফুজ এর।


পরবর্তীতে এ্যাডভোকেট ফজলুল হক উক্ত স্ট্যাম্প দিয়ে বানিয়ে দেয় ভূয়া বিবাহের হলফনামা এবং বানিবহর কাজী কেএমএম ইদদাদ হোসেন এর মাধ্যমে সাক্ষী এবং বর ব্যতীত বিবাহের কাবিন নামা তৈরি করে আসামী মাসুদুর রহমান।


এখানেই শেষ নয়। আসামী মাসুদুর রহমান আসামী জামাল সরদারকে রিমার সাজানো বোন জামাই বানিয়ে বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে সৈনিক মাহফুজের পরিবারের নিকট থেকে লুফে নেয় আরো এক লক্ষ দশ হাজার টাকা। এতেই সব ঝামেলা চুকে যাবার কথা।


তাতেও থেমে থাকেনা চক্রটি। পূনরায় মাহফুজের পরিবারের নিকট দশ লক্ষ টাকা দাবী করলে, ভূক্ত ভোগীরা জানায় রাজবাড়ী ডিবিকে।



অতপর, রাজবাড়ীর  পুলিশ সুপার জি.এম আবুল কালাম আজাদ পিপিএম মহোদয়ের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অপ্স মুকিত সরকার এর সার্বিক তত্তাবধানে

 জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান খান, এর নের্তৃত্বে ডিবির এসআই হাসানুর রহমান, এসআই মিলন চন্দ্র বর্মন, এসআই দেওয়ান সামিম খান সহ সংগীয় ফোর্সের একটি চৌকস টিম বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা এলাকার একটি বাসা থেকে চক্রটিকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফির প্রমানসহ দু’টি অ্যন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, পাঁচটি মেমোরিকার্ড, ভুয়া কাবিননামার কপি ও বিয়ের হলফনামার কপিসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য কাগজপত্র জব্দ করা হয়।


এ ব্যাপারে পাঁচজনের বিরুদ্ধে  সদর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ৯:০৬:৫৭   ২৫২ বার পঠিত