কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে মোটরসাইকেল আটকিয়ে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কয়েস মিয়া মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরই মধ্যে অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট বি এম শফিউর রহমানকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কয়েস মিয়া ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার বহলিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বটতলা ট্রাফিক বক্সের সামনে এলে পুলিশ কনস্টেবল হুমায়ুন মোটরসাইকেল থামাতে বলে। পরে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র যাচাইবাছাই করার একপর্যায়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় বটতলা ট্রাফিক বক্সে নিয়ে যাওয়া হয় কয়েস মিয়াকে। সেখানে কয়েসকে বলা হয় ২৫ হাজার টাকার মামলা হবে। হুমায়ুন কবির মামলা না দেওয়ার অনুরোধ জানালে কথাবার্তার এক পর্যায়ে কয়েস মিয়াকে ৪ হাজার টাকার অফার করা হয়। কয়েস এতেও রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে শেষ পর্যন্ত এক হাজার পাঁচশ টাকায় রফাদফা হয়। এসময় নগদ ৫০০ টাকা কনস্টেবল হুমায়ুন কবিরকে দেওয়া হয় ও বাকি টাকা সঙ্গে না থাকায় এক হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে নেন সার্জেন্ট শফিউর রহমান। টাকা দেওয়ার পর মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, ট্রাফিক সার্জেন্ট শফিউর রহমান গত ২০ মে কিশোরগঞ্জে বদলি হয়ে আসেন। কিশোরগঞ্জে আসার পর থেকেই ঘুষ বাণিজ্যের একটি বড় সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঘুষ না দিলে তার সিন্ডিকেটের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ট্রাক, ট্রাক্টর, সিএনজিচালক ও মোটরসাইকেল আরোহীরা।
ভুক্তভোগী কয়েস মিয়া বলেন, মামলার ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে মোট ১৫০০ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দেওয়া হয়। আমার কাছে টাকা ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ মতো। বাড়ি থেকে বিকাশে টাকা এনে ট্রাফিক সার্জেন্ট শফিউর রহমানের বিকাশ নাম্বারে দেই। আমার ভাইটা প্রতিবন্ধী। তাদের চাপে প্রতিবন্ধী ভাইটা বাজারে গিয়ে আমার বিকাশে টাকা পাঠায়।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট বি এম শফিউর রহমানের সাথে কথা বলতে গেলে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ ছাড়াও সাংবাদিকদের সাইবার ক্রাইমে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন।
পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) শাহজাহান মিয়া বলেন, অভিযোগকারীকে বলা হয়েছে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেওয়ার জন্য। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর ট্রাফিক সার্জেন্ট বি এম শফিউর রহমানকে আপাতত ডিউটি থেকে ক্লোজ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৩১:১৭ ১৩৪ বার পঠিত