অর্থ আত্মসাৎ মামলায় কারাগারে থাকা কক্সবাজারের চকরিয়া বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষককে জামিনে মুক্ত করার জন্য আদালতে হাজির হয়ে মিথ্যা তথ্য ও সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে আবু ছিদ্দিক নামের এক শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু ছালেহ।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) একটি মামলার শুনানিকালে আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ও সাক্ষ্য দেন ওই শিক্ষক। পরে অন্য সাক্ষীর কাছ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ারুল কবির।
কারাগারে পাঠানো শিক্ষক আবু ছিদ্দিক চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত কামাল হোসোইনের ছেলে এবং বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক।
আইনজীবী আবু ছালেহ বলেন, বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে ১ কোটি ৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কর্তৃক বরখাস্ত হন। এ ঘটনায় তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহীন মুরাদ বাদী হয়ে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। পরে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য কক্সবাজারের সিআইডি পুলিশকে দায়িত্ব দেন। সে সময় সিআইডি পুলিশের কাছে প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার কর্তৃক অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সত্য বলে সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিকসহ তিনজন স্বাক্ষ্য দেন। পরে সিআইডি পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে।
আবু ছালেহ বলেন, মামলা আদালতে চলমান থাকাবস্থায় প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার উচ্চ আদালত থেকে অস্থায়ী জামিন নেন।
অবশ্য উচ্চ আদালত সেসময় আদেশে তাকে নির্ধারিত সময়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার। মামলার শুনানি শেষে আদালত প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারকে জেলহাজতে পাঠান।
আবু ছালেহ আরো বলেন, রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী। এ সময় আদালত সিআইডি পুলিশের কাছে স্বাক্ষ্য দেওয়া সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিক ও অপর সাক্ষী মাহফুজুল করিমের কাছে তদন্তে সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে জানতে চান।
এ সময় সাক্ষী মাহফুজুল করিম সিআইডি পুলিশের কাছে দেওয়া সাক্ষ্যের বিষয়ে স্বীকার করলেও অপর সাক্ষী সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারের পক্ষাবলম্বন করে সিআইডি পুলিশের কাছে তিনি স্বাক্ষী দেননি বলে আদালতের মিথ্যা তথ্য দেন।
এ অবস্থায় আদালত সংক্ষুব্ধ হন। এরই প্রেক্ষিতে চকরিয়া চৌকি আদালতের বেঞ্চ সহকারী লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে রবিবার দুপুরে একই আদালতে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে একটি স্বপ্রণোদিত মামলা করেন। ওই মামলায় বিচারক আনোয়ারুল কবির আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অপরাধে সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩০:৩৬ ২৩ বার পঠিত