রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানির অনুমতি চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) অবকাশকালীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মফিজুল হক ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ আগাম জামিন শুনানির আবেদনের জন্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর পক্ষে মামলা লড়ার কোনো ওকালতনামা দেননি। এছাড়া চিন্ময়ের পক্ষে ওকালতনামা থাকা আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা উপস্থিত ছিলেন না। পরে আদালত আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের করা আবেদন নাকচ করে দেন।
আগাম শুনানির আবেদনে বলা হয়, মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একজন সন্ন্যাসী। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। আবেদনে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা কারণে ৩ ডিসেম্বর চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি।
আদালত সূত্র জানায়, শুনানিতে প্রায় আড়াইশ আইনজীবী অংশ নেন। আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে আদেশ দেওয়া হলে আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে যান। ওই সময় তারা আদালতকে বলেন, ওকালতনামা ছাড়া শুনানি করা আইনে বিধান নেই। তখন আদালত বলেন, জামিন আবেদন শুনানির অনুমতি দেওয়া হয়নি, তা নামঞ্জুর করা হয়েছে। একপর্যায়ে বিচারক বিব্রত হয়ে এজলাস থেকে নেমে খাসকামরায় চলে যান। পরে দুপুরে আবার এজলাসে ওঠেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষ জানান, নিরাপত্তার কারণে চিন্ময়ের আইনজীবী ৩ ডিসেম্বর শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি। এ জন্য আজ আগাম জামিন শুনানির আবেদন করা হয়। কিন্তু আইনজীবীদের বাধার মুখে আদালত তা নাকচ করে দেন। তার দাবি, মক্কেলের ওকালতনামা ছাড়া একজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তিনি মামলা লড়তে পারেন। তাকে লড়তে মৌখিক সম্মতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, এখন পর্যন্ত চিন্ময়ের জামিন শুনানিতে অংশ নিতে আসা কোনও আইনজীবীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বা বাধা দেওয়া হচ্ছে এরকম কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি। মক্কেলের ওকালতনামা কিংবা যে আইনজীবীকে মক্কেল ওকালতনামা দিয়েছেন সেই আইনজীবী উপস্থিত থেকে অন্য যে কোনও আইনজীবীকে শুনানিতে আনতে পারেন।
গত ৩১ অক্টোবর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে নগরের কোতোয়ালী থানায় মামলা করা হয়। ২৬ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ৩ ডিসেম্বর জামিন শুনানির দিন থাকলেও কোনও আইনজীবী না থাকায় শুনানির দিন আগামী ২ জানুয়ারি ধার্য রয়েছে। বুধবার যে দুজনের জামিনের শুনানি ছিল, তাদের আইনজীবীও আসেননি। আদালত ২ জানুয়ারি তাদের জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ৩:০৮:৪০ ৪৬ বার পঠিত