২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া আসামিদের স্বজনরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এই রায়ের মাধ্যমে তারা দীর্ঘ অপেক্ষার পর ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার বহুল আলোচিত মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম পিন্টুসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে এই রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘ ২০ বছর পর দেওয়া এই রায়ে বিচারিক আদালতের রায়কে অবৈধ ঘোষণা করে সব আসামির আপিল মঞ্জুর করা হয়।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম পিন্টু। তিনি এখনও কারাগারে। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পিন্টুর ছোট ভাই বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু তিনবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এজন্য পারিবারিকভাবে খুশি হয়েছি। আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ।’
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান জানিয়েছেন, তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর দিকে চেয়েছিলাম ন্যায়বিচারের জন্য। আল্লাহ ন্যায়বিচার দিয়েছে, আমাদেরকে দয়া করেছেন। আল্লাহর দরবারে শুকুরিয়া আদায় করছি।’
বাবরের ছেলে লাবিব ইবনে জামান বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম, ন্যায়বিচার পেয়েছি। আশা করছি, ইনশা-আল্লাহ আমার বাবাকে ফিরে পাব।’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের কারণ দেখে ও নির্দেশনা নিয়ে তারপর আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘রায়ের কারণ দেখে ও নির্দেশনা নিয়ে তারপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপিল করা উচিত বলে মনে করি।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এ ছাড়া ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৩:৪৩ ৪৮ বার পঠিত