‘হাসিনার নির্যাতন হিটলারের নাৎসিবাহিনীর কথা মনে করিয়ে দেয়’

প্রথম পাতা » সুপ্রিমকোর্ট » ‘হাসিনার নির্যাতন হিটলারের নাৎসিবাহিনীর কথা মনে করিয়ে দেয়’
সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪



‘হাসিনার নির্যাতন হিটলারের নাৎসিবাহিনীর কথা মনে করিয়ে দেয়’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই-আগস্ট মাসেই নয়, বিগত সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গুম-খুন ও হত্যার বীভৎসতা সৃষ্টি করে। হিটলারের সময়ের ক্যাম্পের মতো ক্যাম্প তৈরি করে তাতে নিষ্ঠুরভাবে বন্দিদের নির্যাতন করা হয়েছে। তারা শুধু গণহত্যাই করেনি, নির্যাতনের যত রকম পন্থা রয়েছে সবই বাস্তবায়ন করেছে, যা হিটলারের নাৎসি বাহিনীর কথা মনে করিয়ে দেয়।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শুনানি শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারে যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন, তাদের মধ্যকার ১৩ জনকে সোমবার অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আগামী দিনে যারা ফ্যাসিস্ট হতে চান, তাদের জন্য আজকের দিনটি একটি শিক্ষার দিন। মানবতাবিরোধী অপরাধ করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না, বিচারের মুখোমুখি হতে হয় তা আজকের দিনের এক বড় শিক্ষা।

তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিকরণ, দলীয়করণের মাধ্যমে একটি নিপীড়ক সংস্থায় পরিণত করা হয়েছিল, সে স্টোরি আমরা আদালতে তুলে ধরেছি। একটি পরিবারকে ক্ষমতায় রাখার উদ্দেশ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড এছাড়া নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল।

আজকের সব অপরাধের প্রধান দায় শেখ হাসিনার। জুলাই অভ্যুত্থানে ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে টার্গেট ভিত্তিতে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এর তদন্ত সমাপ্ত করে বিচারের উপযোগী একটি প্রতিবেদন দিতে আমরা দুই মাস সময় চেয়েছিলাম, আদালত এক মাস সময় মঞ্জুর করেছেন।

আয়না ঘর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্যাম্পে নিয়ে গুম, খুনের ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নাৎসি বাহিনীর ক্যাম্পগুলোর সঙ্গে তুলনীয় ছিল বিগত সরকারের গুম-খুনের ঘটনা। তারা শুধু যে গণহত্যা করেছে শুধু তাই নয়।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এক নম্বর আসামি শেখ হাসিনা, তিনি ভারতে পালিয়ে আছেন। আমাদের পক্ষ থেকে ফরমাল আবেদন পাঠিয়েছি ইন্টারপোলের কাছে। রেড নোটিশের মাধ্যমে তাকে পেলে যেন গ্রেফতার করা হয়। তবে এর বাইরেও পদক্ষেপ রয়েছে, যেহেতু মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগ রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে।

তিনি বলেন, ডিফেন্সের পক্ষে বেশ কয়েকজন আইনজীবী তাদের ওকালতনামা দাখিল করেছেন তবে তাদের পক্ষ থেকে শুধু একজনের জন্য পিটিশন ছিল। সেই পিটিশনটি ছিল অভিযোগের কপি সরবরাহ করা সংক্রান্ত। কিন্তু পিটিশনটি যথানিয়মে দাখিল করা হয়নি। সুতারাং পিটিশন হিসেবে সেটি গণ্য হয়নি। ভবিষ্যতে তিনি যদি মনে করেন সেটার ব্যাপারে আদালত যথাযথ আদেশ দেবেন।

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক ৯ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিবকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গত ১৭ অক্টোবর পৃথক দুই আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৮:৫২   ৯৫ বার পঠিত  




সুপ্রিমকোর্ট’র আরও খবর


আপিল শুনানি শুরু বাবরের খালাস চাইলেন আইনজীবী শিশির
হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেলেন শমী কায়সার
অর্ধশত বিচারক ও কর্মকর্তার দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে রিট
দুদকের মামলা হাইকোর্টে সাবেক ওসি প্রদীপের স্ত্রীর জামিন
মানি লন্ডারিং মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমানের বন্ধু মামুন
এসপি বাবুল আক্তারের জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই
রিট খারিজ সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হচ্ছে না
আমু-কামরুলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
পিলখানা হত্যাকাণ্ড তদন্তে কমিশন গঠনে দেরি, উষ্মা প্রকাশ হাইকোর্টের
গুমের মামলায় সাবেক ২ র‌্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখাল ট্রাইব্যুনাল

Law News24.com News Archive

আর্কাইভ