রাজধানীর উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলা করেছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য নাজমা বেগমের ভাই মাহাবুব হাসান কাবুল। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ দেখে কাবুলকে শনাক্ত করার পর তাঁর বাসায় অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। তবে তাঁকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় কাবুলের স্ত্রী রোকেয়া আক্তারকে। অভিযানে কাবুলের বাসা থেকে পুলিশের ব্যবহৃত নিরাপত্তা সামগ্রী, ওয়াকিটকি ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। কাবুল আওয়ামী লীগের উপকমিটির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার উত্তরা পশ্চিম থানা ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে কাবুলের বাসা থেকে দেশি-বিদেশি বিপুল পরিমাণ মুদ্রাসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দ করা হয় দুটি প্রাইভেটকার। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন– শাহজাদা খান সাজ্জাদ, তৌজিদুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান।
তিনি জানান, রোকেয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম যৌথ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর উত্তরা এলাকার সাবেক এমপি হাবিব ইসলামের ছেলে আবির হাসান তামিমের শ্বশুরবাড়ি থেকে নগদ ১ কোটি ১৬ লাখ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করে।
রওনক জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও বিশ্লেষণ করে কাবুলকে শনাক্ত করা হয়। কাবুলের বাসা থেকে পুলিশের ব্যবহৃত বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে খেলনা পিস্তলসদৃশ অস্ত্র, গুলি, অস্ত্রের লাইসেন্স, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, ওয়াকিটকিও ছিল। পাশাপাশি একটি জিডির কপি উদ্ধার করা হয়েছে। যেখানে সাবেক এমপি নাজমার ভাই কাবুল বর্ণনা দিয়েছেন, কীভাবে তিনি অস্ত্রটি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
তিনি জানান, কাবুলের শেল্টারদাতা ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক এমপি হাবিব। তবে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। হাবিবের ছেলের শ্বশুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও বিশ্বের ছয়টি দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। জব্দকৃত টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও গাড়ি দুটি সাবেক এমপি হাবিব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, হাবিব বিভিন্ন সময় অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন। তাঁর কাছে একাধিক অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। ধারণা করছি, তাঁর কাছে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া পুলিশের ব্যবহৃত সরঞ্জাম কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে, তা জানার জন্য আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০১:৪০ ৭৭ বার পঠিত