দীর্ঘদিন ধরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে নির্বাহী বিভাগের ইচ্ছা অনুযায়ী অনেক ক্ষেত্রে কাজ করতে দেখা গেছে বিচার বিভাগকে। তবে এবার গণঅভ্যুত্থানের পর বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোর কথা উঠেছে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে।
ছাত্র-জনতার এই আঙ্কারার যেন প্রতিফলনের লক্ষ্যে বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে এবং সুপ্রিম কোর্টের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ছাত্র নেতৃত্বের কাছে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ পরামর্শ দেন।
ফেসবুক পোস্টে বিচারপতি হাসান লিখেছেন, বিচারপ্রার্থী মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট দলীয় রাজনীতির জাঁতাকলে পড়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। বর্তমানে কোনো দলীয় সরকার নেই। তাই নতুন বাংলাদেশের কারিগর, সন্তানতুল্য ছাত্র ছাত্রীদের জন্য দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে সুপ্রিম কোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারক হিসেবে কথাগুলো বলা আমার নৈতিক দ্বায়িত্ব মনে করছি। নিম্নে বর্ণিত কাজগুলো বাস্তবায়িত না হলে সুপ্রিম কোর্ট সবসময় বিতর্কিতই থেকে যাবে এবং তোমাদের স্বপ্নের দেশ গঠনে বড় বাধা হয়ে থাকবে বলে মনে করি।
পরামর্শগুলো হলো…
১) বিচারপতি নিয়োগে দল-নিরপেক্ষ আইন প্রণয়ন করা।
২) হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ গঠনে প্রধান বিচারপতির একচ্ছত্র ক্ষমতায় চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের ব্যবস্থা রাখা।
৩) হাইকোর্ট বিভাগের জি এ কমিটি এবং জাজেজ কমিটি গঠনে প্রধান বিচারপতির একচ্ছত্র ক্ষমতায় লাগাম টানা।
৪) হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকদের পারস্পরিক জেষ্ঠ্যতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে আপিল বিভাগে নিয়োগ সাংবিধানিকভাবে বন্ধ করা।
৫) একই ভাবে আপিল বিভাগের বিচারকদের পারস্পরিক জেষ্ঠ্যতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সাংবিধানিক ভাবে বন্ধ করা।
৬) বিচারকদের দুর্নীতি ও পক্ষপাতমূলক আচরণ বন্ধে বিচারক এবং সাংসদদের সমন্বয়ে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা মূলক সাংবিধানিক পদ্ধতি প্রণয়ন করা।
ফেসবুক পোস্টে ছাত্রদের উদ্দেশে লিখেছেন, মনে রাখবা, বিচারপতিরা আসমান থেকে নেমে আসে না। তোমাদের অগ্রজদেরই কেউ কেউ বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১:১৯:৫৪ ৫০ বার পঠিত