দুভাবে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন মতিউর

প্রথম পাতা » অপরাধ » দুভাবে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন মতিউর
বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪



দুর্নীতিতে অভিযুক্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্যসাবেক সদস্য মতিউর রহমান।

ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর থেকেই ব্যাপক অর্থ-সম্পদ ও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্যসাবেক সদস্য মতিউর রহমানকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন বাসভবনে খোঁজ নিয়েও সন্ধান মেলেনি তার। এমনকি ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও আর অফিসে আসেননি। যাচ্ছেন না নতুন অফিসেও।

প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ‘ম্যানেজ করে’ তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। সম্প্রতি আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তার দেশ ছাড়ার খবর সূত্রের বরাতে জানিয়েছে একটি জাতীয় গণমাধ্যম।

দুর্নীতির অভিযোগে পঞ্চমবারের মতো মতিউরের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এর আগে চারবার তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পায় সংস্থাটি। কিন্তু প্রতিবারই নানা কৌশলে নানা প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ক্লিন চিট পেয়েছিলেন ছাগলকাণ্ডের মতিউর।

২০০৪ সালে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম দুদকে অভিযোগ আসে। সে সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের।

হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়র মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তা রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়ে দিয়েছিলেন ট্যাক্স ফাইলে।

২০০৮ সালে আবারও দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে তার বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন। কিন্তু তদন্ত শুরু হতে না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা চাপা পড়ে যায়, ক্লিন চিট পান মতিউর।

এরপর ২০১৩ ও ২০২১ সালে আরও দুবার দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগ ছিল অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির। কিন্তু কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল। ফলে আবারও ক্লিন চিট।

অপরাধী অপরাধ আড়াল করতে নানা পন্থার আশ্রয় নেবে। প্রশ্ন ওঠে: দুদক কেন খতিয়ে দেখেনি বিষয়গুলো?

তাই পঞ্চমবারের মতো তদন্তে নেমে দুদক আগের চারবারের প্রতিটি বিষয়ে পর্যালোচনা করার আশ্বাস দিয়েছে। একইসঙ্গে আশ্বাস দিয়েছে, যে বা যাদের মাধ্যমে বারবার দায়মুক্তি পেয়েছে মতিউর, তা-ও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের।

মতিউরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শেয়ারবাজারও। তার ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। মঙ্গলবার ব্যাংকগুলোতে পাঠানো চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার বিও অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, দুদকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিও হিসাব জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

২০০৮ সাল থেকে সক্রিয়ভাবে শেয়ারবাজারে জড়িত ছিলেন মতিউর রহমান। দুভাবে তিনি বাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। এগুলো হলো-প্লেসমেন্ট বাণিজ্য এবং কারসাজির আগাম তথ্য জেনে দুর্বল কোম্পানির শেয়ার কিনে বেশি দামে বিক্রি করতেন। সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুসারে এ ধরনের কাজ বেআইনি এবং অনৈতিক। বিশ্লেষকদের মতে, একই সঙ্গে তিনি কয়েকটি অপরাধ করেছেন। প্রথমত, তিনি সরকারি বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। দ্বিতীয়ত, বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন। তৃতীয়ত, তিনি সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন করেছেন। চতুর্থত, তিনি শেয়ার লেনদেন করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। তবে ইতোমধ্যে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে এনবিআর। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ থেকে তাকে অপসারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১:২৬:০৫   ৯৩ বার পঠিত   #  #  #  #




অপরাধ’র আরও খবর


আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন রাজধানীতে ব্যস্ত সড়কে ছিনতাই, ঝরছে প্রাণও
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকে চিঠি দিল ইউসিবিএল
ধানমন্ডি থানায় জিডি করলেন নীলা ইসরাফিল
ভীতি ছড়াচ্ছে লুণ্ঠিত অস্ত্র, জেল পালানো আসামি
আওয়ামী আমলের ১৫ বছরে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার
ব্যবসার মূলধন জোগাড় করতে প্রবাসী চিকিৎসককে খুন: পুলিশ
চট্টগ্রামে চিন্ময় অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, আইনজীবীকে হত্যা
মায়ের মুখে স্প্রে করে ৮ মাস বয়সী শিশুটিকে নিয়ে যায় ডাকাতরা: র‌্যাব
তিন দিন নিখোঁজ শিল্পপতি, মিলল লাশের ৭ টুকরা
জেনেভা ক্যাম্পের বোমা তৈরির কারিগর কসাই সোহেল গ্রেপ্তার

Law News24.com News Archive

আর্কাইভ