আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

প্রথম পাতা » সারাদেশ » আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট
রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪



---

আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা বসানো কেন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১, ৩২ ও ৩৫ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে ঘোষণা করা হবে না এবং কেন লোহার খাঁচার পরিবর্তে কাঠগড়া পুনঃস্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সারাদেশে কোন কোন আদালতে এই ধরনের লোহার খাঁচা বিদ্যমান আছে তা জানিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আইন সচিবকে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা অপসারণ করতে সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী রিট দায়ের করেন। গত বছরের ১৬ অক্টোবর আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচার অপসারণ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ দেন তারা।

১০ আইনজীবী হলেন- জি.এম. মুজাহিদুর রহমান, মুহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, মোহাম্মদ নোয়াব আলী, আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী, মোহাম্মদ সাজ্জাদ সারোয়ার, মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, মোহাম্মদ মিজানুল হক ও আবদুল্লাহ সাদিক।

রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আইন সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, দেশের সিংহভাগ আইন ও আদালতের ব্যবস্থা এবং অবকাঠামো ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি। আদালতে আসামি হাজিরার জন্য কাঠগড়ার প্রচলন ব্রিটিশ আমলেই শুরু হয়। তবে দুর্ধর্ষ আসামি, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করানো হত। বিচার শেষে দোষীকে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে এমন ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু বিচার চলাকালীন আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রাখার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না। ভারতেও সাধারণ আদালতের কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহার নেই। আমাদের দেশের কোনো আইনে কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহার নিয়ে কোনো বিধান নেই। তবে কারা আইন, ১৮৯৪ এর ৫৬ ধারা মতে জেলে বন্দি কয়েদিকে সরকারের অনুমোদনক্রমে লৌহ-শৃঙ্খলে আটক করে রাখার বিধান রয়েছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই অভিযুক্তকে প্রকাশ্য আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি করে অভিযুক্ত ব্যক্তির Presumption of Innocnce ভঙ্গ করা হচ্ছে। যা একইসঙ্গে দেশের প্রচলিত আইন এবং আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানের পরিপন্থি।

নোটিশে আরও বলা হয়, দেশি-বিদেশি আইন, আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান ও উচ্চ আদালতের নজিরগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায় আদালতে কাঠগড়ার পরিবর্তে লোহার খাঁচার ব্যবহার অমানবিক, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ, আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান ও Principle of presumption of innocence -এর পরিপন্থি। মানুষের স্বাভাবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আদালতে লোহার খাঁচার অপসারণ একান্ত প্রয়োজন।

এ অবস্থায় সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদসহ আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নোটিশ পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচার অপসারণ করার অনুরোধ করা হয়। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৬:৫২   ১২৭ বার পঠিত  




সারাদেশ’র আরও খবর


কিশোরগঞ্জে ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের মামলা
উপ সচিব ও তদুর্দ্ধ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্ধয়ে বিএএসএসপিও-২৫ আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে।
রাজবাড়ীতে ‘‘বিশেষ টাস্কফোর্স’’ কমিটির মাধ্যমে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
লালমোহনে মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা ও সংবর্ধনা
যশোরে নাশকতা মামলায় আওয়ামী লীগের ১২৫ নেতাকর্মী কারাগারে
বুয়েট ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তিন আসামি ২ দিনের রিমান্ডে
ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ রিমান্ডে সাদপন্থি মুয়াজ বিন নূর
বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি আইনজীবী আলিফ হত্যা: তদন্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন সব সদস্য
বিদেশে পলাতক ১৯ নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
লালমোহনে সাদপন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা

Law News24.com News Archive

আর্কাইভ